রাকিব হাসান,জেলা প্রতিনিধি,মাদারীপুর :ঢাকা বড় সাংবাদিক পরিচয়ে আশ্রয় নিয়ে এক সাংবাদিক দম্পত্তিকেই প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ ঘটিয়েছে কথিত দুই সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম ওরফে আ: ছালাম মিয়া।
তারা কৌশলে নারী সাংবাদিকের ছবি সংগ্রহ করে অন্য একটি নগ্ন ছবি সাথে যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ করে।এরপর দিনের পরদিন তাদের ইচ্ছে মতো  চাঁদা দাবি করে এতো সীমাহীন মানসিক যন্ত্রণায় পরতে হয় ওই সাংবাদিক দম্পত্তির।এতে করে তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বিপর্যন্ত নেমে আসে।আর এমন ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুর সদরে পৌর এলাকায়।আর এসকল প্রতারনা করেছে ঢাকার কথিত দুই সাংবাদিক।
তারা হলেন,ঢাকা এশিয়ান  টিভির সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগি মানব কন্ঠের সাব এডিটর পরিচয়দারী রিয়াজুল ইসলাম ওরফে ছালাম মিয়া। এরপর মাদারীপুর প্রেস ক্লাব নামে একটি ভুয়া ফেজবুক আইডি খুলে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়।এমন মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সাংবাদিক দম্পতি  মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেই প্রেক্ষিতে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ গতকাল রাতে ঢাকার সাভার ও গুলশান থেকে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম খান ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেো গাইবান্ধা জেলার করিসিং গ্রামের সিরাজ খানের  সাইফুল ইসলাম খান (৩৬),ও ঝালকাঠি জেলার  ওয়াজেদ আলীর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে সালাম মিয়া (৩৮)। রোববার (৯ এপ্রিল) বিকেল ৪ টার দিকে  অফিসার্চ ইনচার্জ মোঃ মনোয়ার হোসেন চৌধুর মাদারীপুর মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসকল কথা জানান।
 এজাহার সূত্রে জানা যায় ,সাংবাদিক দম্পত্বির সাথে পরিচয়ের সুত্রে সুকৌশলে পরস্পর যোগ সাজোসে হঠাৎ বাসায় আসেন। সরল বিশ্বাসে মেহমান হিসেবে আপ্যায়ন করে বাসায় থাকতে দেয়। বাসায় অবস্থান কালে তাদের অনুমোতি ছাড়াই রাতে ব্যাক্তিগত মোবাইল ও ল্যাবটবে থাকা ব্যাক্তিগত কিছু ছবি তথ্য ও উপাত্য ফেইসবুক মেইলের পাসওয়ার্ড সুকৌশলে নিয়ে যায়। কিছুদিন পরে সাংবাদিক দম্পত্বির ফেইসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়টস আপে আপত্বিকর কিছু ছবি পাঠিয়ে ৫লক্ষ টাকা দাবি করে। একপর্যায় টাকা না পেয়ে হোয়াটস আপ ফেইসবুকে কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে সাংবাদিক দম্পত্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বিপর্যন্ত করে।
ওসি  মোঃ মনোয়ার হোসেন চৌধুরী আরো বলেন,সাংবাদিক দম্পতির ল্যাপটপ থেকে তাদের স্বামী স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি, ভিডিও চুরি করে আনে তারা। ঢাকায় ফিরেই নারী সাংবাদিকটির বিভিন্ন ছবির নিচের অংশে নানা নগ্ন দৃশ্য সংযোজন করে তা পাঠিয়ে দেয় তার স্বামীর ইনবক্সে। এরপর সাইফুল ইসলাম ও রিয়াজুল নানারকম ভয়ভীতি দেখায়।
একপর্যায়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং তা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিশোধ না করলে নগ্ন দৃশ্যাবলী অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয় তারা এবং মানসিক চাপ ও ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু নগ্ন ছবি ওই সাংবাদিক দম্পত্তির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশী ঘনিষ্ঠজনদের কাছে পাঠিয়েও দেয়। এরপরে আমাদের পুলিশের একটি টিম অভিযানে নামে এবং ঢাকা, সিঙ্গাইরসহ বিভিন্ন স্থানে টানা ১০ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে কথিত এশিয়ান টিভির সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের কম্পিউটারে যে আলামত লুকানো ছিলো তা সহ মোবাইল জব্দ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *