মামুন পারভেজ হিরা,নওগাঁ ঃ নওগাঁর রাণীনগরে কোন ভাবেই থামছে না কৃষি জমির মাটি লোপাট করা। কৌশল পাল্টিয়ে রাত নামতেই শুরু হচ্ছে মাটি কাটার মহোৎসব। একটি মেশিনের স্থানে একাধিক মেশিন দিয়ে কাটা হচ্ছে সরকারি খাস জমির মাটি।

এতে করে কৃষি জমি হারানোর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পাঁকা সড়ক। পরিবেশ ও মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ এমন কর্ম কান্ড বন্ধ করতে দ্রুত প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দিনে ও রাতে গিয়ে দেখা যায় যে, মিরাট ইউনি য়নের ২নং স্লুইস গেট সংলগ্ন স্থানে আতাইকুলা মৌজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ সংলগ্ন স্থানে সরকারি খাস জমির সঙ্গে ব্যক্তি কিছু মালিকানা জমি বছরে ১৬হাজার টাকা বিঘা
হিসেবে বন্ধক নিয়ে খনন করা হচ্ছে পুকুর। প্রায় মাসখানেক
আগে অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে মাটি বহনে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা
এমন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মক র্তা রাতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাটি বহনের কারণে দুইজন ট্রাক্টর চালককে কারাদন্ড প্রদান করেন।

এরপর সংবাদ পাওয়ার পর ওই স্থানে গিয়ে উপজেলা ভ’মি অফিসের লোকজন সরকারি খাস জমির একটি সাইনবোর্ড দিয়ে আসে এবং সরকারি জমি পরিমাপ করে লাল ফিতা দিয়ে চিহ্নিত করে আসে।

এর কয়েকদিন পরে উপজেলার কুজাইল এলাকার সর্ব রামপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম রাজনৈতিক ব্যক্তিকে ম্যানেজের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে কৌশল পাল্টিয়ে রাতে মাটি কাটাছে।

এরপর বিষয়টি প্রশাসনকে একাধিকবার জানালেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেদারছে রাতে সরকারি খাস
জমিসহ কৃষি জমি গর্ত করে মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায়
বিক্রি করা হচ্ছে আর বড় বড় ড্রাম ট্র্যাকের চাঁকায় নষ্ট হচ্ছে
গ্রামীণ সড়ক ও প্রধান প্রধান পাঁকা সড়কগুলো। অপরদিকে ট্রাক থেকে পাঁকা সড়কের উপর মাটি পড়ার কারণে প্রতিনি য়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত অনেকেই
জানান যে, রাতে মাটি কাটার জন্য উপজেলা প্রশাসন, পুলি শ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লাখ টাকার বিনি ময়ে ম্যানেজ করা হয়।

তা না হলে রাতে খবর পেয়ে পুলিশে র লোকেরা দফায়দফায় ভেকু মেশিনের চাবি কেড়ে নিয়ে যায়। পরে সন্ধির মাধ্যমে চাবি ফিরিয়ে দেয়। তাই এতো ঝুক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্তহতেই স্থানীয় ইউনিয়ন ভ’মি অফিসের মাধ্যমে উপ জে লা ভ’মি অফিস ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।

মাটি ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান ওই স্থানে হয়তো বা কিছু খাস জমি আছে। তবে জমির মালিকরা আমার সঙ্গে চুক্তি করে মাটি কেটে নিচ্ছে। আমি মাটির বিনি ময়ে তাদের জমি খনন করে দিচ্ছি। অনুমতি নিয়ে মাটি খনন করা হচ্ছে কিনা এই বিষয়ে জমির মালিকগুলো জানেনতারা কি অনুমতি নিয়েছেন কিনা। রাতে মাটি কাটার বিষয়ে তিনি বলেন দিনের বেলায় প্রশাসন হানা দেয় তাই তিনি রাতে মাটি কাটছেন।

মিরাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার হাফেজ মো. জিয়াউর রহমান মোবাইল ফোনে জানান যে ওই জমি থেকে মাটিকাটা নিয়ে মামলা চলমান ছিলো। এরপর আমার আর কিছু জানা নেই। তবে মাটি খেকোরা নিশ্চয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগা যোগ করেই হয়তো বা রাতে মাটি কাটছে।

থানার ওসি আবু ওবায়েদ মোবাইল ফোনে জানান পুলিশ শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কাজ করে। কোথায় কে মাটি কাটছে সেই বিষয়টি দেখবে উপজেলা প্রশাসন কিংবা ভূমি অফিস। যারা পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে তা সম্পন্ন মিথ্যে ও বানোয়াট। আমি এমন অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম মোবাইলফোনে জানান যে বিষয়টি তিনি জানার পর স্থানীয় ইউনিয়ন ভ’মি অফিসের মাধ্যমে মাটি কাটা ব্যক্তিকে মাটি কাটা বন্ধ করার জন্যনির্দেশনা প্রদান করেছেন।

এরপরও যদি সে মাটি কাটা বন্ধ নাকরে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

One thought on “নওগাঁয় কৌশল পাল্টিয়ে রাতে লোপাট হচ্ছে খাস জমির মাটি”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *