মোঃ হাবিব ওসমান, (ঝিনাইদহ) প্রতিবেদক:
শান্ত জলের বুকে লাল শাপলার গালিচার মাঝে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল।

উড়েচলা পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত চারিপাশ। বাহারি রঙের এসব অতিথি পাখির খুনসুঁটি আর ছুটাছুটি যে কারো মনেক উদ্বেলিত করে তুলে। শীতের মৌসুমে প্রকৃতির অপ রূপ অলঙ্কার হয়ে ওঠা এ অতিথি পাখির ঝাঁক বেঁধে উড়ে চলার দৃশ্য দেখে মনে হয় যেন জলরঙে আঁকা ছবি।

প্রতিবছর শীতকাল এলেই বাংলাদেশের জলাশয়, বিল, হা ওড়, পুকুর ভরে যায় নানা রংবেরঙের নাম না জানা পা খি তে।

আদর করে আমরা সেগুলোকে বলি অতিথি পাখি। মূলত এই অতিথি পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয় নিজেদের জীবন বাঁচাতে।

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপার আশুরহাট গ্রামটিতে হঠাৎ ই ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসা শুরু করে।

স্থায়ী কোন বাসা না করায় পাখিগুলো যায় আসে। এরপর কেটে যায় কয়েক বছর। ২০১৩ সালে স্থায়ীভাবে বাসা বেঁধে বসবাস শুরু করে হাজার হাজার পাখি। ১০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে পাখির অভয়ারণ্য। যা রক্ষার্থে স্থানীয়ভাবে পাহারাদারের ব্যবস্থাও করা হয়।

তখন থেকেই আশুরহাট গ্রামটি লোকমুখে পাখি গ্রাম হিসে বে পরিচিতি পেতে থাকে। যা বর্তমানে সকলের মুখে মুখে ছড়িয়েছে।

গ্রামটির অবস্থান ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার
নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে।

২০১৩ সালেই তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপ জে লা প্রশাসন এই এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘো ষণা করে।

প্রতিবছরের মতো গ্রামের মধ্যপাড়ার আব্দুর রা জ্জাক ও গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের পুকুর পাড়ে শিমুুল, জাম, মেহগনী গাছের ডালে ডালে বাসা বাঁধে হাজার হাজার পাখি।

উপযুক্ত আবহাওয়া, পরিমিত খাবারের জোগান থাকায় পাখিগুলো এখানেই জায়গা করে নেয়।

তাই শীতকাল এলেই দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করে অতিথি পাখি। শিমুল গাছে থাকা পাখিগুলো সব সময় গাছে ই অবস্থান করে। আষাঢ় থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত এসবপাখি এখানেই অবস্থান করে।

অভয়ারণ্য তৈরির শুরু থেকেই নানারকম হুমকির মুখে পড়েতে হয় অতিথি পাখিদের।

রাতের আধারে পাখি নিধন, নিরাপত্তা ও আশ্রয়স্থল চরম সং কটে পড়ে। বর্তমানে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

কেটে ফেলা হচ্ছে পাখির অভয়ারণ্যের গাছ। হাজার হাজার পাখির কলতানে মুখরিত এই অভয়ারণ্য।

কিন্তু গাছ কেটে ফেলার কারণে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন অতিথি পাখির বসবাস সংকুচিত হয়ে পড়বে।

সেই সাথে পাখিশূন্য হয়ে পড়বে জেলার একমাত্র এই পাখির অভয়ারণ্য।

এলাকাবাসীর দাবি, এই পাখি অভয়ারণ্যের মধ্যে থাকা গাছ কাটা ও পাখি শিকার যেন না করা হয়। আশুরহাট পাখি সংরক্ষণ সমিতির সদস্য আরিফ জানান, কয়েক দিন আগে গ্রামের মকররম আলীর ছেলে নইমুদ্দিন ও বদরউদ্দিনের ছেলে শফি উদ্দিন এই পাখি অভয়ারণ্যের গাছ কেটেছে।

আরও কেউ কেউ গাছ কাটার পাঁয়তারা করছে। এভাবে গাছ কেটে ফেললে পাখিশূন্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সফর আলী জানান, জমির মালিকেরা মাঝে মধ্যেই গাছ কাটেন। এভাবে গাছ কাটার কারণে পাখিদের আবাসন সংকট দেখা দেবে। সেই সঙ্গে পাখিশূন্য হয়ে পড়বে এই অভায়রণ্য।

কোনো পাখি শিকারি যাতে পাখি শিকার করতে না পারে তাই আমরা সারা রাত ধরে পাহারা দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *