মহেশপুর(ঝিনাইদহ)সংবাদদাতাঃ
ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে হৃদরোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা ফয়জুল হক লাবু (৪০) মারা গেছেন। শোকে মাতম স্বজনেরা নিচ্ছেন লাশ দাফনের প্রস্তুতি। এমন অবস্থায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে মেয়ে লাবিবা নামের এক শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হলো। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার স্বরুপপুর ইউনিয়নের কুসুমপুর গ্রামে বুধবার এ ঘটনা ঘটে। লাবিবা দত্তনগর এস এম ফার্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়েন শিক্ষার্থী।
লাবিবার পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান,  কুসুমপুর গ্রামের মৃত দিদার বক্সের ছেলে ফয়জুল হক লাবু। তাঁর মেয়ে লাবিবা ৩ মে (বুধবার) এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজী প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। হৃদরোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে ফয়জুল হক লাবুর মৃত্যু হয়। বাড়ি জুড়ে শোকের মাতম চলছে লাশ দাফনের প্রস্তুতি। বাবার মৃত্যুর পর লাবিবা ভেঙে পড়লেও স্বজনদের কথায় এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায় সে।
দত্তনগর এসএম ফার্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব হুসাইন বলেন,লাবিবা আমার স্কুলের খুবি ভালো ছাত্রী ‘বাবাকে হারানো যে কারও জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও এসএসসি পরীক্ষার্থী লাবিবা বাবা হারানোর কষ্ট নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আমরাও তার পরীক্ষার সময় যতটা সম্ভব পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।
পরীক্ষা শেষে লাবিবা বলেন,‘বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। বাবা চাইতেন আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। তাই এমন অবস্থায়ও আমি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। বাবার আত্মাকে আমি কষ্ট দিতে চাই না।’
মহেশপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব রঞ্জন কুমার বলেন, লাবিবা ২০৪ নং রুমে স্বাভাবিক ভাবেই পরীক্ষা দিচ্ছে।
লাবিবার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা সকালেই জানতে পেরেছিলাম। সবার সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিলে তার জন্য ভালো হবে ভেবে তার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিক। সে এক হাতে রুমাল দিয়ে বারবার চোখ মুছছিলো। আর অন্য হাতে কলম ধরে পরীক্ষার খাতায় লিখছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *