জিললুর রহমান,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে গত দুই দিনের মাঝারি বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় দক্ষিণঅঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত বিঘার বোরো ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

ক্ষেতে কেটে রাখা পাকা ধানের সাথে কৃষকের স্বপ্ন বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। ফলন ভালো হলেও আবহাওয়া পরিস্থিতি ও শ্রমিক
সংকটের কারণে সময় মতো ঘরে তুলতে না পেরে বিপাকে পড়েন তারা।

ঈদের আগে থেকে কিছু কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হলেও কৃষকরা ধান বাড়িতে না এনে জমিতেই রেখে দেন। কেটে রাখা পাকা ধান বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। অনেকের দাঁড়িয়ে থাকা পাকা ধানগাছ বাতাসে হেলে পড়েছে। ফলে কাটা এবং গুছিয়ে ঘরে তোলাসহ ধান শুকানো নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন বেকায়দায়।

বৃষ্টির একটু বিরতিতে নতুন করে কিছু কৃষক ফসল গোছাতে ব্যস্ত হলেও অনেকের পাকা ধানগাছ শ্রমিক সংকটে মাঠেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। গত রবিবার ও সোমবারের দু’দফায় মাঝামাঝি ধরনের ঝরো বৃষ্টি শুরু হয়। এতে অনেক খেতেই পানি জমে গেছে।

কালিগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, প্রখর রোদে রোজা রেখে ধান কাটতে পারিনি। এ সময় ধান তেমন পাকেনি। তাই ঈদের দুই দিন পরে ধান কাটা শুরু করি। ধান ঘরে তোলার আগেই বৃষ্টিতে আমার ধানের জমিতে কাটা ধান ভাসছে।
কুশুলিয়া ইউনিয়নের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, তিন বিঘার মধ্যে এক বিঘা জমির ধান বাড়িতে আনতে পেরেছি। বাকি দুই বিঘার ধান কেটে জমিতে ফেলে রাখায় বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। এতে আমার বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে। আমার চারটা গরু আছে। ধান বাড়িতে আনতে না পারলে বিচালির অভাবে আমার গরুগুলো না খেয়ে মারা যাবে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকরা কৃষকের ধান কেটে দিলেও এবার তাদের সংখ্যা ছিল কম। ফলে অনেক কৃষক শ্রমিক জোগাড় করতে পারেননি। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি খারাপ আবহাওয়া কৃষকদের ধান কাটা পরিস্থিতিকে বিপাকে ফেলেছে।
কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসীম উদ্দিন বলেন,
আবহাওয়া পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ হলেও দুই দিনের বৃষ্টিতে ধানের
তেমন সমস্যা হবে না। তবে বৃষ্টির আগে যারা ধান ঘরে তুলতে পারেননি তাদের ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব মাঠ থেকে পানি অপসারণ করে ধান সংগ্রহ করে বাড়িতে আনার তাগিদ দেন তিনি।

তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে কালিগঞ্জে ২৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষি অফিসের মতে,গত সোমবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০ মিলি লিটার। এ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বোরো ধান ঘরে উঠেছে। দ্রুত যেন বাকী ধানগুলো ঘরে তোলা যায় সে বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *