আন্তর্জাতিক ডেস্ক:চীন ও রাশিয়া কৌশলগত কমরেড বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। সোমবার দেশের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ইউক্রেনকে যেভাবে সাহায্য করছে তা দৃষ্টিকটূ। এর জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ইইউয়ের ক্রমশ দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই দূরত্ব আরও বাড়বে এবং ইইউকে তার ফল ভুগতে হবে।

রাশিয়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনোরকম আপোস করবে না এবং এর জন্য সকল পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

এছাড়া সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্টের রাশিয়া সফর নিয়েও বহু কথা বলেছেন ল্যাভরভ। তিনি জানিয়েছেন, দুই দেশের প্রেসিডেন্টের ১০ ঘণ্টার ওপর আলোচনা হয়েছে। চীন এবং রাশিয়া কৌশলগতভাবে কমরেড। আগামী দিনে দুই দেশের সমঝোতা যাতে আরও মজবুত হয়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে শি জিনপিং এবং ভ্লাদিমির পুতিনের।

বস্তুত, শি জিনপিং যে সময় রাশিয়া সফর করেছেন, ঠিক সেই সময়েই পুতিনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক আদালত। ঠিক সেই সময়ে শি রাশিয়ায় পৌঁছানোয় ইউরোপের বহু বিশ্লেষক বলেছিলেন, ক্ষমতা জাহির করতেই এই সময় চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পুতিন।

একইসঙ্গে তারা বলেছিলেন, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে অসম সমঝোতা তৈরি হচ্ছে। রাশিয়ার পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সস্তায় প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল নেওয়ার চেষ্টা করছে চীন।

এদিন এই বক্তব্যের ঘোর সমালোচনা করেছেন ল্যাভরভ। তার বক্তব্য, দুই দেশ সমানে সমানে কৌশলগত সমঝোতা করেছে। পাল্টা সমালোচনা করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া এবং চীনের এই সমঝোতায় অস্বস্তিতে পড়েছে ইইউ। সে কারণেই এই ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে।

ইইউয়ের প্রতি যথেষ্ট ক্ষোভ জানিয়েছেন ল্যাভরভ। তার বক্তব্য, ইইউয়ের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ইউক্রেনকে যেভাবে অস্ত্র এবং ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, তা অভূতপূর্ব। এর ফলে ইইউয়ের সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে। এই দূরত্ব আর কমানো যাবে না। রাশিয়ার কাছে জাতীয় স্বার্থ সবচেয়ে বড়। ইইউ সেখানেই আঘাত করেছে। এর ফল ইইউকে ভুগতে হবে।

সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক মাইন দিবস। এই দিনটিকে মনে রেখে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের কৃষি জমিতে মাইন পুঁতে দিয়েছে। ফলে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দ্রুত ওই মাইনগুলো তুলে ফেলা উচিত। বেসামরিক মানুষের ওপর আঘাত হানা যুদ্ধাপরাধ বলেও জানিয়েছেন বেয়ারবক।

এদিকে মঙ্গলবার ভোরের দিকে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে আঘাত হানে রাশিয়ার ড্রোন। ইউক্রেন জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে বন্দরের একাংশ। এই বন্দর দিয়ে কৃষ্ণসাগরে রসদ পাঠাচ্ছিল ইউক্রেন। ফলে সে কাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *