ডেস্ক নিউজ:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় আড়াইশ কি লোমিটার রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা (ক্লোজ সার্কিট ক্যা মেরা) বসানোর কাজে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
হাইওয়ে পুলিশ এরইমধ্যে সংশোধিত প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।
জানা গেছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি বেপরোয়া গতি ঠেকাতে ‘অটোমেটিক ডিটেকশন ব্যবস্থা’ চালু করার সুপা রিশ করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
এ ব্যবস্থায় বেপরোয়া গতির গাড়িগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাম লার আওতায় চলে আসবে। এমনকি দায়ের করা মামলা র তথ্য গাড়ির মালিকের মোবাইল ফোনে চলে যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তাবনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কাজ করবে হাইওয়ে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসিটিভি প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এখন প্রকল্প সংশোধনের কাজ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ‘
ডিজিটাল অটোফাইন সিস্টেম’ নামে একটি অ্যাপ এই প্রক ল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। নির্ধারিত গতিসীমার বেশি গতি তে, অর্থাৎ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে, সেই গাড়ির বিরু দ্ধে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরিমানা বা মামলা হবে।
হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, পাইলট প্রকল্পের আওতায় সিসিটিভি স্থাপন করা হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির বেপরোয়া গতি, কিংবা ডাকাতির মতো ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়কে নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী সিসিটিভি স্থাপন করা হবে, যা মহাসড়কের প্রতিটি জায়গা কে দিনে ও রাতে নিরাপদ রাখবে। কয়েকটি স্থানে সিসি টিভি র কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে। ফলে স্থানীয়ভাবে এবং হাই ওয়ে পুলিশের সদর দফতর থেকেও মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলো তদারক করা যাবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কে বেশিরভাগ দুর্ঘটনার মূল কারণই হচ্ছে গাড়ির বেপরোয়া গতি। ‘ডিজিটাল অটোফাইন সিস্টে ম’ চালু হলে, কোনো চালক যখন বুঝতে পারবেন যে, তিনি নজরদারিতে রয়েছেন, তখন তিনি নির্ধারিত গতির বাইরে গিয়ে গাড়ি চালাবেন না। এছাড়া উল্টো পথে গাড়ি চলাচ লেরও আর সুযোগ থাকবে না।
হাইওয়ে পুলিশ আরো জানায়, নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে কেউ গাড়ি চালালে, সড়কে বসানো ডিটেক্টেড মেশি নের মাধ্যমে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাবে। একইসঙ্গে মামলার বিষয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ির মালিকের কাছে এস এমএস চলে যাবে।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিসিটিভি স্থাপনের পর বৈদ্যুতিক সংযোগ কোন প্রক্রিয়ায় নেয়া হবে, সেসব বিষয় পর্যালোচনা চলছে। দিন ও রাত বিবেচনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪৯ ০টি লোকেশনে বিভিন্ন ধরনের ১৪২৭টি সিসিটিভি ক্যামে রা বসবে। ব্যবহার করা হবে পিটিজেড ড্রোন ক্যামেরা, লং ভি শন ক্যামেরা, বুলেট ক্যামেরা, প্রিটি জেড সলস্প্রে ক্যামেরা, চেকপয়েন্ট ক্যামেরা।
মনিটরিংয়ের জন্য থাকবে পাঁচটি সাব সেন্টার। মূল কমান্ড সেন্টার থাকবে মেঘনা ঘাটে। এ ছাড়া কুমিল্লা হাইওয়ে রিজি ওন, গাজীপুর রিজিওন, দাউদকান্দি ও চট্টগ্রামের বারো আ উলিয়ায় মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে।
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি বরকতউল্লাহ খান বলেন, বেশ কিছু বিষয় যুক্ত করে একটি প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্র ণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পাস হয়ে আস লে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।
হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান বলেন, পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড় কের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে বৈদ্যুতি ক সংযোগের বিষয়গুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, এসব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় রয়েছে।
শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নয়, দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা এবং ডাকাতির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোঅনেকটাই সম্ভব হবে।