বিনোদন ডেস্ক:সম্প্রতি ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে এক নারী প্রযোজককে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন রহমত উল্লাহ নামে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক প্রযোজক। তা নিয়ে কদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। তবে বিভিন্নভাবে সেই অভিযোগ থেকে শাকিবকে বাঁচাতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন তার দুই স্ত্রী অপু বিশ্বাস ও বুবলী।

এর মধ্যে অপু সাবেক স্ত্রী হলেও বুবলী সাবেক না বর্তমান তা নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। তবে এই দুই চিত্রনায়িকাই শাকিবের দুই সন্তান জয় ও বীরের মা। তাই তো তাদের সন্তানদের বাবাকে অভিযোগ থেকে বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছেন তারা।

শাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পরপরই রহমত উল্লাহর সঙ্গে মীমাংসার উদ্যোগ নেন অপু। তার উদ্যোগের ওই প্রযোজকের সঙ্গে ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় বৈঠকে বসেছিলেন শাকিব। তবে অপুর এমন পদক্ষেপের পর পিছিয়ে নেই বুবলীও। নানাভাবে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছেন এই নায়িকা।

সবশেষ সোমবার শাকিবকে নিয়ে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বুবলী। সেখানে ওই অভিযোগের বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন ও যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

বুবলী লেখেন, শাকিব খান একজন অভিনয়শিল্পী যে কিনা প্রায় ২৪ বছর এই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করেছেন, অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সিনেমা নিয়ে ভেবেছেন। হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের ইস্যু এনে তাকে নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে।

‘অনেক বছর আগের “অপারেশন অগ্নিপথ’’ নামের একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিবের ব্যাপারে বিস্তর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে প্রডিউসার দাবি করে এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে নানান অভিযোগ করছেন। আচ্ছা, শুটিং চলাকালীন এত এত অভিযোগ যখন টের পেয়েছিল উনারা, তাহলে কেন তখন তাকে বাদ দেয়া হলো না? সমিতিগুলোতে অভিযোগ করা হলো না? দু-পক্ষের কথা শোনা হলো না?’

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের অস্ট্রেলিয়ায় অপারেশন অগ্নিপথ শুটিংয়ের পর ২০১৮ সালে শাকিব তার সুপার হিরো নামের আরেকটি সিনেমার শুটিং সম্মানের সঙ্গে প্রায় ২০ দিনে অস্ট্রেলিয়া থেকে শেষ করে আসেন। তিনি (শাকিব খান) যদি কোনো ব্যাপারে গিল্টি থাকতেন তাহলে তো অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ তাকে তখন শুটিংয়ের অনুমতিই দিতেন না, শাকিব নিজেও অস্ট্রেলিয়া যেতেন না।

বুবলী লেখেন, মধ্যরাতে তার হোটেল রুমে নারী সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে বলা হচ্ছে, মধ্যরাতে তার হোটেল কক্ষে নারী কি করছিলেন? কী তার বা তাদের উদ্দেশ্য ছিল? এত বছর কেন ওসব ঘটনা নিয়ে সেই নারী প্রকাশ্যে কথা বললেন না? এখন কেন এই প্রডিউসার দাবি করা ব্যক্তি অস্থির হয়ে গেলেন?

আর দেশে হোক বা বিদেশে। যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে, খাতায় নাম উঠতেই পারে, কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, উভয় পক্ষের প্রমাণাদি নিয়ে।

তিনি লেখেন, কয়েক বছর ধরে দেখছি, একটা চক্র কিছুদিন পর পরই শাকিবকে নিয়ে ওঠেপড়ে লাগে। নানা চক্রান্তে মেতে ওঠে। বিষয়টা যেন এমন, তাকে হটিয়ে দিতে পারলেই আমরা রাজা। কিন্তু তার লাখো-কোটি ভক্তরা কখনোই তা হতে দেয়নি। দিবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়।

গত বুধবার (১৫ মার্চ) শাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী সমিতি ও ক্যামেরাম্যান সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ জানান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্লাহ।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে এর বিপরীতে ওই প্রযোজকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে শনিবার (১৮ মার্চ) গুলশান মডেল থানায় গিয়েছিলেন এই চিত্রনায়ক। তবে সেই মামলা নেয়নি থানা। এরপর রোববার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) শরণাপন্ন হন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *